রাজশাহী প্রতিনিধ: “শিক্ষা হবে উন্মুক্ত, হবে বাণিজ্যমুক্ত”—এই ব্রত নিয়ে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে এক অনন্য আলোড়ন সৃষ্টি করেছে স্যাট একাডেমি। এক দশক পেরিয়ে আজ এটি শুধু একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম নয়, বরং একটি মিশন, একটি নিরব বিপ্লব, একটি জাতির জেগে ওঠার গল্প।
আজ শনিবার নগরীর একটি অভিজাত সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয় ‘একাডেমিক আলোকযাত্রা ২০২৫ – সাংবাদিক সহায়িকা’ শীর্ষক আয়োজন। এতে স্যাট একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা এমএ রহমান আজিজ বলেন, “আমি আজ এসেছি শুধু একটি পণ্যের গল্প বলতে নয়, বরং এক সুপ্ত মিশনের আলোকছটা নিয়ে।”
তিনি জানান, ২০১৩ সালে মানসিক প্রস্তুতি ও ২০১৫ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে স্যাট একাডেমি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে একা হাতে গড়ে তুলেছেন এই প্ল্যাটফর্ম, যেখানে তাঁর ১৪ বছরের পরিশ্রম, আয়ের প্রতিটি পয়সা, দক্ষতা ও সময় বিনিয়োগ করা হয়েছে। সামাজিক বাধা, অবজ্ঞা, গুজব এবং প্রচণ্ড আর্থিক ক্ষতির মাঝেও তিনি লক্ষ্যচ্যুত হননি—একটি শিক্ষিত, দক্ষ ও স্বনির্ভর জাতি গঠনের স্বপ্নে আজও তিনি অটল।
বর্তমানে স্যাট একাডেমি দেশের অন্যতম বৃহৎ শিক্ষাভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে রয়েছে:
১ কোটিরও বেশি নিবন্ধিত শিক্ষার্থী, ২০ লাখের বেশি প্রশ্ন, এক লক্ষাধিক পাঠকাঠামো, ১০ হাজারের বেশি মডেল পরীক্ষা, দৈনিক গড়ে ২ লক্ষাধিক অনুসন্ধান, এছাড়াও রয়েছে সরাসরি পরীক্ষা, অধ্যয়ন পরিকল্পনা, সংক্ষিপ্ত নোট, নিজস্ব প্রশ্নব্যাংক তৈরির সুবিধা এবং শিক্ষক-ব্যবসায়ী পার্টনারশিপ কাঠামো।
স্যাট একাডেমির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা (“ভিশন ২০৩০”) দেশের ৬৪ জেলায় অফলাইন সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে সহযোগিতা, গ্রামীণ অঞ্চলে পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপ, দক্ষ নেতৃত্বগুণসম্পন্ন তরুণ গঠনের লক্ষ্যে রোডম্যাপ প্রদান
আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিল: এক দশকের সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও সাফল্যের গল্পভিত্তিক উপস্থাপনা। তরুণদের উদ্দেশ্যে অনুপ্রেরণাদায়ক আহ্বান—“তোমরাই স্যাট, তোমরাই পরিবর্তন।”
সাংবাদিক সম্মাননা, প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং নেটওয়ার্কিং, প্রামাণ্য পরিসংখ্যান, চিত্র, ব্যানার ও প্রেস-উপকরণ বিতরণ।
সমাজের সচেতন ব্যক্তিরা বলেন, প্রতিষ্ঠাতা এমএ রহমান আজিজের আত্মনিবেদন ও সাহসিকতা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। একা একজন মানুষ, যিনি নিজ অর্থ, শ্রম ও স্বপ্ন দিয়ে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর জন্য আলোর দ্বার খুলে দিয়েছেন—তাঁর এই প্রচেষ্টা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পৃষ্ঠপোষকতার দাবিদার।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সরকারের উচিত এমন যুগান্তকারী উদ্যোগকে আরও সম্প্রসারিত করতে সহযোগিতা করা, যেন সারাদেশের তরুণ সমাজ এই ডিজিটাল শিক্ষাবিপ্লবের সুফল পেতে পারে।
শিক্ষায় প্রযুক্তিনির্ভর, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন এক বিকল্প পথ তৈরির যে স্বপ্ন স্যাট একাডেমি দেখাচ্ছে—তা আজ সময়ের দাবি। আর এই পরিবর্তনের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠতে পারে গণমাধ্যম।
স্যাট একাডেমি শুধু একটি নাম নয়—এটি এক সাহসিকতার, আত্মত্যাগের এবং পরিবর্তনের প্রতীক।