• রাজশাহী, বাংলাদেশ
  • ৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধন এর জন্য আবেদনকৃত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • news@sonybangla.news
  • ০১৭৭৫-৫৮৯৫৫৮

নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দফায় দফায় মিটিং

প্রকাশ: বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ ৪:১৬

নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দফায় দফায় মিটিং

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অবৈধ সিণ্ডিকেটের সদস্যরা নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে গত দুইদিন ধরে দফায় দফায় মিটিং করেছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে গত কয়েক দিনে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সিণ্ডিকেটের সদস্যরা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে দফায় দফায় মিটিং করেন।

এসব মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম, একজন বহিরাগত (চিফ ইনস্ট্রাক্টর দাবিদার) আতিকুর রহমান, অ্যাসেট প্রজেক্টের ব্লক বাটিক ও স্কিন প্রিণ্টিংয়ের গেস্ট ট্রেইনার মুন্নী আকতার, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামের স্ত্রী গেস্ট ট্রেইনার (গার্মেণ্ট) শায়লা শারমিন ও গার্মেণ্ট ট্রেডের ইনস্ট্রাক্টর শাহানাজ নাজনীন। তারা সবাই প্রতিষ্ঠানটিতে অঘোষিত পাঁচ সদস্যের সিণ্ডিকেটের সদস্য। তারাই মূলত প্রতিষ্ঠানটির সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। তবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো বিষয়েই রাজস্ব খাতের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের গুরুত্বই দেন না সিণ্ডিকেটের সদস্যরা। তাদের কোনো পরামর্শ ও মতামত নেওয়া হয়না। উল্টো ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রাজস্ব খাতভুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। দীর্ঘ দিন ধরে এ অবস্থা চলে আসছে। এতে করে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
সিণ্ডিকেটের কারণে রাজস্ব খাতভুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোণঠাসা হয়ে আছেন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ জিইয়ে রয়েছে। কিন্তু কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পান না। প্রতিষ্ঠানটির নানা অনিয়ম নিয়ে এরই মধ্যে জাতীয়, স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে করে সিণ্ডিকেটের সদস্যরা চরমভাবে চটেছেন। অ্যাসেট প্রজেক্টের ব্লক বাটিক ও স্কিন প্রিণ্টিংয়ের গেস্ট ট্রেইনার মুন্নী আকতার সাংবাদিকদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। তিনি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে সব ম্যানেজ করে নেবেন বলেও মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে চিফ ইনস্ট্রাক্টর দাবিদার (বহিরাগত) আতিকুর রহমান বলেন, আমি এখানকার শিক্ষক। আমি বহিরাগত না। আর আমি কোনো ঝামেলার মধ্যে নেই।
জানতে চাইলে গেস্ট ট্রেইনার মুন্নী আকতার বলেন, আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই সঠিক নয়। যারা অভিযোগ করেছে তারা মিথ্যা বলেছে।
জানতে চাইলে সব অভিযোগ অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সঠিক আছি। রিপোর্ট করে আমাদের সরানো যাবে না। এখানে কোনো অনিয়ম হয় না বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে রাজশাহী মহিলা টিটিসিতে মোট ছয়টি ট্রেড আছে। এরমধ্যে দুইটি ট্রেড অন্য সব ট্রেড থেকে অনেকটা বঞ্চিত ও অবহেলিত। অবহেলিত দুটি ট্রেড হলো: কম্পিউটার ট্রেড এবং অটোক্যাড ট্রেড। এই দুটি ট্রেডের প্রতি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামের কোন সুনজর নেই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কম্পিউটার ট্রেডে ব্যাকডেটেড কম্পিউটার দিয়ে প্রশিক্ষনার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কোনো উন্নত মানের কম্পিউটার নেই। ভালো মানের কম্পিউটার না থাকায় প্রশিক্ষণের মান ভালো হচ্ছে না। ক্লাস পরিচালনা করতে গেলে কম্পিউটারে সমস্যা দেখা দেয়। কম্পিউটারের চাহিদার বিষয়টি বিস্তারিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামকে অবহিত করা হলেও তিনি কোনো কর্ণপাত করেন না, উল্টো খারাপ আচরণ করেন।
তারা আরো জানান, ফুড ট্রেড, গার্মেণ্ট ট্রেড এবং ব্লকবাটিক ট্রেডকে বেশি গুরুত্ব দেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তাই বরাদ্ধও বেশি। সব থেকে বেশি জিনিস কেনা হয় ফুড ট্রেডের জন্য। কারণ অন্য ট্রেডে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সম্পর্ক ভালো নয়। তারা কোনো ভুয়া ভাউচার করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেন না।
তারা বলেন, কম্পিউটার ট্রেডের দুই জন শিক্ষিকাকে ফুড ট্রেডে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- শবনম মুস্তারী ও মুস্তারী বেগম। এতে করে কম্পিউটার ট্রেডে প্রশিক্ষণের মান খারাপ হচ্ছে।
সরকার থেকে গরিব মেয়েদের তিন মাস মেয়াদী কোর্সে বেকারী এন্ড পেস্টি প্রোডাকশন ট্রেডে ভর্তি করানো হয়। গরিব মেয়েদের দিন হাজিরা ভিত্তিক টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু গরিব মেয়েদের জন্য নির্ধিারিত আসন দখল করে অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠানটির চারজন শিক্ষিকা গোপনে সেখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তারা হলেন- ইনস্ট্রাক্টর শবনম মুস্তারী, ইনস্ট্রাক্টর সেফাতুন নেসা, ইনস্ট্রাক্টর মুস্তারী বেগম ও ইনস্ট্রাক্টর শামীমা ডেইজি। তারা প্রতিদিন ১৫০ টাকা করে পান। সে হিসেবে একেক জন তিন মাসে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা করে পাওয়ার কথা।
সরকারি চাকরি করে নিজ প্রতিষ্ঠানের কোর্সে ভর্তি হয়ে টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গরিব মেয়েদের ভর্তি তথা প্রশিক্ষণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছেন ওই চার জন শিক্ষিকা। আর এতে সহযোগিতা করছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।

সর্বশেষ সংবাদ

 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: ইফতেখার আলম বিশাল

যোগাযোগ: শিরোইল গৌধুলী মার্কেট ঢাকা বাস টার্মিনাল বোয়ালিয়া রাজশাহী। ই-মেইল: smbishal18@gmail.com, মোবাইল:০১৭৭৫-৫৮৯৫৫৮