• রাজশাহী, বাংলাদেশ
  • ৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধন এর জন্য আবেদনকৃত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • news@sonybangla.news
  • ০১৭৭৫-৫৮৯৫৫৮

সিণ্ডিকেটের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে রাজশাহী মহিলা টিটিসিতে ক্ষোভ-অসন্তোষ বাড়ছে

প্রকাশ: সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫ ৩:০৮

সিণ্ডিকেটের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে রাজশাহী মহিলা টিটিসিতে ক্ষোভ-অসন্তোষ বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অবৈধ সিণ্ডিকেটের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড এখনো অব্যাহত রয়েছে। এই সিণ্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম। তিনি প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়েও একজন বহিরাগত (চিফ ইনস্ট্রাক্টর দাবিদার) আতিকুর রহমান এবং অ্যাসেট প্রজেক্টের ব্লক বাটিক ও স্কিন প্রিণ্টিংয়ের গেস্ট ট্রেইনার মুন্নীর পরামর্শে প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। অথচ রাজস্ব খাতভুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কোনো পরামর্শ ও কথা আমলেই নেন না ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। উল্টো ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রাজস্ব খাতভুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। দীর্ঘ দিন ধরে এ অবস্থা চলে আসছে। যতই দিন যাচ্ছে ততই বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছেন সিণ্ডিকেটের সদস্যরা। এতে করে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছে।

পাঁচ সদস্যের সিণ্ডিকেটের অপর দুই সদস্য হলেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামের স্ত্রী গেস্ট ট্রেইনার (গার্মেণ্ট) শায়লা শারমিন ও গার্মেন্টস ট্রেডের ইনস্ট্রাক্টর শাহানাজ নাজনীন। এই সিণ্ডিকেটের পাঁচ সদস্যের কারণে রাজস্ব খাতভুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোণঠাসা হয়ে আছেন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ জিইয়ে রয়েছে। কিন্তু কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পান না। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির নানা অনিয়ম নিয়ে জাতীয়, স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে করে সিণ্ডিকেটের সদস্যরা চরমভাবে চটেছেন। দম্ভোক্তি প্রকাশ করে তারা বলেছেন এসব রিপোর্ট করে তারা কিছুই করতে পারবে না। অ্যাসেট প্রজেক্টের ব্লক বাটিক ও স্কিন প্রিণ্টিংয়ের গেস্ট ট্রেইনার মুন্নী সাংবাদিকদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সব ম্যানেজ করে নেবেন বলেও মন্তব্য করেন। আর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেছেন এসব রিপোর্ট করে আর যাই হোক তাদেরকে সরানো যাবে না।
টিটিসির একটি সূত্র বলছে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম ও গেস্ট ট্রেইনার মুন্নী আকতার পতিত আ’লীগ সরকারের সক্রিয় সমর্থক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু গত ৫ আগস্ট আ’লীগ সরকারের পতনের পর আগের রাজনৈতিক অবস্থান বদলে নিজেদের স্বার্থে তারা বর্তমানে বৈষম্য বিরোধী চেতনার বলে দাবি করছেন। বছর দুয়েক আগে গেস্ট ট্রেইনার হিসেবে নিয়োগ পেতে ব্লক বাটিক ও স্কিন প্রিণ্টিং ট্রেডে পরীক্ষা দিয়েছিলেন মুন্নীসহ মোট তিনজন। এরমধ্যে বাকি দুইজন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও মুন্নী অকৃতকার্য হন বলে পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন। ওই পরীক্ষা কক্ষে সে সময় দায়িত্বে ছিলেন আবেদা খাতুন নামে একজন শিক্ষিকা। এরপর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের অপসারিত ও পলাতক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের স্ত্রী শাহিন আকতার রেনীর সুপারিশে মুন্নীর চাকরি হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি গেস্ট ট্রেইনার হিসেবে কর্মরত আছেন।
টিটিসির অপর একটি সূত্র জানায়, বিভিন্ন ট্রেডে মালামাল ক্রয় থেকে শুরু করে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করা হয় বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু কিছু কিছু মালামালের তথ্য ষ্টোরে এন্টি করা হয় না। হাবিবুর রহমান নামে একজন ষ্টোর কিপারের দায়িত্বে থাকাকালে তার সময়ে প্রায় ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মামলামালের তথ্য ষ্টোরে এন্টি হয়নি। হাবিব তার প্রতিবাদ করলে ওপর মহলে যোগাযোগ করে তাকে পাবনা টিটিসিতে বদলী করে দেওয়া হয়। বিভিন্ন ট্রেডের মালামাল কেনাকাটা করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম, বহিরাগত আতিকুর রহমান, আব্দুল হামিদ নামে একজন জেনারেল শিক্ষক, শাহনাজ নাজনীন ও মুন্নি আকতার। রাজশাহী মহিলা টিটিসির আর্থিক কেনাকাটা তারাই করেন। ভুয়া ভাউচার তৈরি করা হয়।
এ ব্যাপারে চিফ ইনস্ট্রাক্টর দাবিদার (বহিরাগত) আতিকুর রহমান বলেন, অনেক দিন থেকেই আমি এখানকার শিক্ষক। বহিরাগত হবো কেন। তবে এর স্বপক্ষে কোনো সদুত্তর ও প্রমাণ দিতে পারেননি তিনি।
জানতে চাইলে গেস্ট ট্রেইনার মুন্নী বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব কথা বলা হচ্ছে তা সঠিক নয়। যোগ্যতা বলেই আমার চাকরি হয়েছে। যারা অভিযোগ করেছে তারা মিথ্যা বলেছে এবং তারাই অকৃতকার্য হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
জানতে চাইলে সব অভিযোগ অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম বলেন, কে অভিযোগ করেছে তার নাম বলেন, তারপর তথ্য দেবো। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, অভিযোগকারীকে আমাদের সামনে হাজির করেন তার পরে তথ্য দেবো। এখানে কোনো অনিয়ম হয় না বলে দাবি করেন তিনি।

সর্বশেষ সংবাদ

 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: ইফতেখার আলম বিশাল

যোগাযোগ: শিরোইল গৌধুলী মার্কেট ঢাকা বাস টার্মিনাল বোয়ালিয়া রাজশাহী। ই-মেইল: smbishal18@gmail.com, মোবাইল:০১৭৭৫-৫৮৯৫৫৮