নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমানের নামে পলাতক আসামিদের কাছে ঘুষ চেয়ে প্রত্যাহার হয়েছেন একই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: ওয়ারেশ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুষ চাওয়ার একাধিক অডিও ভাইরাল হলে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ভাইরাল হওয়া একাধিক অডিও ক্লিপের একটি থেকে শোনা যায়, রাফি নামে কোনো এক মামলার পলাতক আসামির কাছে ঘুষ দাবি করছেন এসআই ওয়ারেশ। রাফি এসআইকে বলেন, গ্রেফতার করা হবে না আশ্বস্ত করায় তিনি কোথাও পালাননি। সবাই পলাতক জানলেও তিনি বাসায় অবস্থান করছেন। এ সময় এসআই বলেন, রাফিকে গ্রেফতার করা হবে না। ওসির জন্য যেন ‘বাজেট’ রাখা হয়। পরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তিনি রাফির কাছ থেকে ২ হাজার ৪০ টাকা নেন। কিন্তু দাবি অনুযায়ী পাঁচ হাজার টাকা না দেয়ায় গালি দেন এসআই। তখন ওই আসামি একদিন পর বাকি তিন হাজার টাকা দেবেন বলে জানান। পরে নিজের সাথে থাকা ফোর্সের চা-নাস্তার টাকাও দাবি করেন তিনি।
আরেকটি অডিওতে শোনা যায়, আসামি আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসে থানার ডিউটি অফিসারের কাছে কাগজ (রিকল) জমা দিয়েছেন। কিন্তু এসআই ওয়ারেশের কাছে কাগজ না দেয়ায় তিনি আসামিকে গালি দেন।
আরো একটি অডিওতে আরেক মামলার আসামির সাথে ওয়ারেশের কথোপকথন শোনা যায়। সবগুলো অডিওতে টাকা চাওয়ার বিষয়টি উঠে আসে। আসামিরা কাঁচা টাকা না দেয়ায় তিনি সবাইকে গালিগালাজও করেন।
সূত্র জানিয়েছে, গত ৩ নভেম্বর নগরীর আইডিবাগান পাড়া এলাকায় সম্রাট নামে এক যুবককে দুর্বৃত্তরা মারধর করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই ওয়ারেশ। পরে তিনি আসামিদের সাথে কথা বলতে শুরু করেন। তিনি পর্যায়ক্রমে তাদের কাছে ওসির নামে ঘুষ দাবি করতে শুরু করেন। বিভিন্ন বাহানায় অনেকের কাছ থেকে টাকাও নেন। যে কারণে আসামিদের গ্রেফতারও করেননি তিনি। পরে গত ৭ নভেম্বর আসামিরা আদালত থেকে জামিন পান।
তবে এসব অভিযোগ সম্পর্কে এসআই ওয়ারেশ গণমাধ্যমকে জানান, ফাঁস হওয়া অডিও সঠিক নয়। এ ব্যাপারে তিনি পরে কথা বলবেন।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আরএমপি কমিশনারের নজরে পড়ায় এসআই ওয়ারেশকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু চলছে।’
সনি বাংলা ডট কম/ইআবি