অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২৮ আগষ্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের একান্ত সচিব আরাফাত আমান আজিজ ছাত্র ও এলাকাবাসীদের সাথে একটি সভা করেছেন।
উক্ত সভায়, শিরোইল কলোনী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন প্রামানিকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসে। ২০১৮ সালে স্কুলটির জন্য জমি অধিগ্রহন ও ক্ষতিপুরণ বাবদ ৭৫ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেয় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন।
এ অনুদানের টাকা থেকে একই বছর ১৮ এপ্রিল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সৈয়দ আখতারুল আলমের কাছ থেকে ২০ শতক জমি অধিগ্রহন করে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে যে জমি সভাপতির কাছ থেকে অধিগ্রহন দেখানো হয়েছে সে জমি আখতারুল আলমের ছিলনা বলে দাবি করেন অভিযোগকারীরা। তাহলে কী জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সভাপতিকে জমি অধিগ্রহণ বাবদ ৪১ লাখ টাকা প্রদান করা হলো! এনিয়ে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে স্থানীদের মাঝে। মো. আখতারুল আলম শাহমখদুম থানা আ’লীগের সভাপতি এবং সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ঘনিষ্ট হওয়ার সুবাদে স্কুলটিতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া নিয়োগের ক্ষেত্রেও করেছেন স্বজনপ্রীতি, অনিয়মের মাধ্যমে একই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে চাকরি দিয়েছেন কণ্যা ও জামাইকে। এছাড়া ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমনের শ্যালক ও ম্যানেজিং কমিটির আরও এক সদস্য বিদ্যুৎসাহীর ছেলেকেও চাকরি দিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষাদান প্রকল্প দেখিয়ে ৩টি প্রজেক্টর ও প্রত্যেক শিক্ষক কে একটি করে মোট ৯টি ল্যাপটপ প্রদান করা হয়। এবং ১২টি সিসি ক্যামেরা ক্রয় বাবদ সর্বমোট ভাউচার করা হয় ৬,০৬৯০০ টাকা। ৪র্থ ও ৫ম তলা ভিত্তি প্রস্ত অনুষ্ঠানের ব্যায় দেখানো হয়েছে ৫১,৪১৯ টাকা। পহেলা বৈশাখ পালন, মাদক বিরোধী অনুষ্ঠান ও নিরাপদ সড়ক অনুষ্ঠানের নামে ১ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা। জমি রেজিস্ট্রি খরচ দেখানো হয়েছে ৯ লাখ টাকা।
সিটি কর্পোরেশনের প্রদানকৃত ৭৫ লাখ টাকার মধ্যে বিভিন্ন খাতে ব্যায় দেখানো হয়েছে ৫৭,৮৫,৮১৯ টাকা। অবশিষ্ট ১৭,১৫,৫১৮ টাকা বিদ্যালয়ের তহবিলে জমা রয়েছে বলে ভুমি অধিগ্রহনকৃত প্রদত্ত টাকার খরচের হিসাব বিবরনী উল্লেখ করেছেন প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন প্রামানিক।
অন্যদিকে ৯টি ল্যাপটপ স্কুল চলাকালিন সময় ব্যবহারের কথা থাকলেও তা করেন না স্কুলটিতে কর্মরত শিক্ষকরা। ব্যক্তিগত কাজে এবং বেশিরভাগ সময় নিজ বাসায় রাখেন তারা বলেও অভিযোগ রয়েছে। এনিয়েও চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্কুলটিতে অধ্যানরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে।