নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী নগরীর তালাইমারি শহীদ মিনার এলাকায় ঘটে গেলো আরেকটি হৃদয়বিদারক ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় এক পিতা—আকরাম হোসেন (৪৫), জীবন দিলেন সন্ত্রাসীদের নির্মম নির্যাতনে। তিনি পেশায় বাস চালক এবং রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, বেশ কিছুদিন ধরে আকরামের মেয়েকে একদল বখাটে যুবক ইভটিজিং করে আসছিল। এক সময় সাহস করে প্রতিবাদ করেন আকরাম হোসেন। সেই সাহসই যেন কাল হয়ে দাঁড়ায়। অভিযুক্ত নান্টু, বিশাল, রতনসহ একাধিক যুবক আকরামের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়। পরে গতকাল রাতে সাড়ে দশটার দিকে প্রকাশ্য রাস্তায় তাঁকে ইট দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনা শুধু একজন পিতার মৃত্যু নয়—এটি সমাজের একটি ভয়াবহ চিত্র, যেখানে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোই যেন অপরাধ।
বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাক হোসেন জানান, “তালাইমারী এলাকায় উভয় পক্ষের সংঘর্ষে আকরাম হোসেন আহত হন এবং হাসপাতালে আনার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। দোষীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
এ ঘটনায় শুধু একটি পরিবার নয়, কেঁপে উঠেছে গোটা রাজশাহী নগরী। এমন বর্বরতা ও আইনহীনতার বিরুদ্ধে এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নিলে সমাজে আর কোনো পিতা তাঁর কন্যার সম্মানের জন্য দাঁড়াতে সাহস পাবেন না।
স্থানীয়রা বলেন, আমরা চাই, এই ঘটনায় জড়িত সব অপরাধীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক। একই সঙ্গে প্রয়োজন, সমাজের সকল স্তরে সচেতনতা এবং নারীর প্রতি সম্মানবোধ প্রতিষ্ঠা করা।
সচেতন ব্যক্তিরা জানান, ইভটিজিং একটি সামাজিক ব্যাধি, এবং তার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো কোনো অপরাধ নয়—বরং তা এক নাগরিক দায়িত্ব।
এই হত্যাকাণ্ড যেন আমাদের ঘুম ভাঙ্গায়—আরো একটি আকরামের মৃত্যু নয়, এখন সময় প্রতিবাদের, এখন সময় জেগে ওঠার।