‘আমরা আর অনশন করব না, আমাদের ওপর অনেক চাপ’ এমনটাই বলছিলেন ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে আমরণ অনশন করা ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেত্রীরা।
ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের ঘটনায় ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ১২ নেত্রী সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়েছিলেন আমরণ অনশন করার জন্য।
প্রথমে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রবেশের সময় বাধাপ্রাপ্ত হন বহিষ্কৃত এই নেত্রীরা। এরপর প্রতিবাদের মুখে তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দিয়ে আবার গেট বন্ধ করে দেয়া হয়। সেখানে ১ ঘণ্টা অবস্থান করার পর বাইরে বেরিয়ে আসেন তারা।
সেসময় সেখানে অপেক্ষারত গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের কাছে বের হয়ে আসার কারণ জানতে চান। কিন্তু ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী তাদেরকে এড়িয়ে রিকশায় উঠে ক্যাম্পাসের দিকে চলে চান এবং বলেন তিনি এ প্রসঙ্গে কোনো কথা বলবেন না।
এর কিছুক্ষণ পর কার্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে বের হন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আখতার বৈশাখীসহ আরও কয়েকজন নেত্রী। তাদের কাছে বেরিয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘আমরা অনশন করতে আসছিলাম। এখন চলে যাচ্ছি। অনশন করবো না। আমাদের উপর অনেক চাপ। আমরা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলব না। আপনারা আমাদের আর প্রশ্ন করবেন না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বহিষ্কৃত নেত্রীরা আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের একটি কক্ষে অবস্থান নেন। সেখানে যান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আবদুল আওয়াল শামীম এবং উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান। আবদুল আওয়াল শামীম এসব নেত্রীকে কার্যালয় থেকে বের হয়ে যেতে বললে তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন।
এর আগে রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলের দিকে ইডেন কলেজের অডিটোরিয়ামের সামনে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার সংবাদ সম্মেলন চলাকালে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
পরে ওইদিন রাতেই সংঘর্ষের ঘটনায় কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ১৬ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রীরা হলেন- ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ৈ, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, তানজিলা আক্তার, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা ঊর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি ও সাদিয়া জাহান সাথী। এই তালিকায় আছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম বিন্তি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী। কর্মীদের মধ্যে আছেন রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা ও সূচনা আক্তার।
ঘটনার শুরু হয় গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে, ওইদিন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার চাঁদাবাজি ও সিট বাণিজ্য নিয়ে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস।
এর দুদিন পর শনিবার রাত ১১টার দিকে জান্নাতুল ফেরদৌসকে হল থেকে মারধর করে বের করে দেয়া ও হেনস্তা করারও অভিযোগ ওঠে। এরপরেই মুখোমুখি অবস্থান নেয় কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ। দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।