• রাজশাহী, বাংলাদেশ
  • ৯ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধন এর জন্য আবেদনকৃত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • news@sonybangla.news
  • ০১৭৭৫-৫৮৯৫৫৮

স্বামী-স্ত্রী গ্রেফতার রাজশাহীতে এমপির ভাতিজা পরিচয়ে চাকরি দেওয়ার নামে কোটি টাকা আত্মসাত

প্রকাশ: বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩ ৩:৪৩

স্বামী-স্ত্রী গ্রেফতার রাজশাহীতে এমপির ভাতিজা পরিচয়ে চাকরি দেওয়ার নামে কোটি টাকা আত্মসাত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আ’লীগের একজন এমপির ভাতিজা পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়ার নামে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাজশাহীতে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে নগরীর সপুরা ম্যাচ ফ্যাক্টরি এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রাজশাহী নগরীর দড়িখড়বোনা এলাকার মো: সাদেকুজ্জামানের ছেলে নাহিদুজ্জামান পাপ্পু (৩০) ও পাপ্পুর স্ত্রী বাঁধন জামান (২৮)।
নাহিদুজ্জামান পাপ্পু আ’লীগের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর শপিংমল থিম ওমর প্লাজার প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। পাপ্পুর বাড়ি নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায়। তবে তিনি নগরীর সপুরা ম্যাচ ফ্যাক্টরির সামনে ফ্লাট কিনে সেখানে বসবাস করেন। বাঁধন জামান হলেন পাপ্পুর দ্বিতীয় স্ত্রী। বাঁধন জামানের বাবার বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুর।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, নগরীর থিম ওমর প্লাজায় গোদাগাড়ী থানার চাত্রাপুর গ্রামের জনি আহম্মেদ নামের এক যুবকের সাথে পাপ্পুর পরিচয় হয়। সেখানে পাপ্পু নিজেকে ওই প্লাজার অ্যাডমিন অফিসার এবং এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর ভাতিজা বলে পরিচয় দেন। এরপর জনির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন পাপ্পু। একপর্যায়ে পাপ্পু তাকে পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেন। এজন্য তারা একটি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে চুক্তিপত্র তৈরি করেন। পরে চুক্তি অনুযায়ী জনি নগরীর থিম ওমর প্লাজায় গিয়ে দুই লাখ টাকা জমা দেন। এরপর বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে তার কাছ থেকে আরো আট লাখ টাকা নেন পাপ্পু। পরে পুলিশ কনস্টেবল পদে জনির চাকরি না হলে তিনি পাপ্পুর কাছে টাকা ফেরত চান। কিন্তু পাপ্পু টাকা দিতে নানা টালবাহানা শুরু করেন।
এভাবে সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন পাপ্পু। একপর্যায়ে জনি থিম ওমর প্লাজায় পাপ্পুর সাথে দেখা করে টাকার জন্য চাপ দিলে পাপ্পু তাকে একটি চেক দেন। জনি চেক নিয়ে টাকা তোলার জন্য ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন, ওই অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। এরপর জনি আবার পাপ্পুর সাথে যোগাযোগ করলে পাপ্পু তাকে ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সপুরা ম্যাচ ফ্যাক্টরি মোড়ে টাকা নেওয়ার জন্য আসতে বলেন।
জনি সেখানে গিয়ে পাপ্পুকে মোবাইলে কল দিলে সেটি বন্ধ পান এবং দেখেন যে, তার মত প্রতারণার শিকার অনেক ব্যক্তিই টাকার জন্য অপেক্ষা করছেন। তখন জনি অন্য ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলেন এবং সবাই মিলে সপুরা ম্যাচ ফ্যাক্টরি মোড়ে থাকা পাপ্পুর ভাড়া বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তারা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন। এরপর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে পাপ্পু দম্পতিকে গ্রেফতার করে।
ভুক্তভোগীরা জানান, পাপ্পু নিজেকে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর ভাতিজা পরিচয় দিতেন। তিনি এমপির মাধ্যমে চাকরি নিয়ে দেবেন এমন আশ্বাসও দেন। চাকরি নিয়ে দেওয়ার নাম করে অন্তত ৩০ জনের কাছ থেকে তিনি প্রায় তিন কোটি হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু কারও ভাগ্যে জোটেনি চাকরি। বরং পাপ্পুর কাছে টাকা ফেরত চাইলে উল্টো চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে পুলিশে দেয়ার হুমকি দিতেন।
তারা আরো জানান, টাকার জন্য চাপ দিলে অনেককেই চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্রও দেয়া হয়। ভুয়া ওই নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিস্থলে যোগদান করতে গিয়ে অনেকেই হয়রানির শিকার হয়েছেন।
মহানগর পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পাপ্পু ও তার স্ত্রী বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন জায়গায় চাকরি দেওয়া এবং মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৮৫ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন। অভিযুক্তরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন থেকে সহজ সরল মানুষকে চাকরির প্রলোভন দিয়ে প্রতারণা করে আসছিল।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাপ্পুর প্রতারণার শিকার ৮ জন ব্যক্তি বাদি হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। সেই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার দুপুরে পাপ্পু ও তার স্ত্রী বাঁধনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে জানতে মোবাইলে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য জানা যায়নি।

সনি বাংলা ডট কম/ ই আবি

সর্বশেষ সংবাদ

 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: ইফতেখার আলম বিশাল

যোগাযোগ: শিরোইল গৌধুলী মার্কেট ঢাকা বাস টার্মিনাল বোয়ালিয়া রাজশাহী। ই-মেইল: smbishal18@gmail.com, মোবাইল:০১৭৭৫-৫৮৯৫৫৮