অনলাইন ডেস্ক: ‘প্রধানমন্ত্রী কি বলবেন যে, তার কত পার্সেন্ট সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে? শতকরা ৩০ ভাগ, ৪০ ভাগ সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে? আপনি দুই সন্তানের মাকে রাতের আঁধারে গ্রেপ্তার করেছেন। এটাতে আপনার সুনাম ক্ষুণ্ন হয় না? ফেসবুকে একটা পোস্ট কারণেই আপনার সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে?’
ফেসবুকে লেখালেখির কারণে নাকি রাজবাড়ীর মহিলা দল নেত্রী সোনিয়া আক্তার স্মৃতিকে গ্রেপ্তারে প্রধানমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে- সেটি জানতে চেয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোনিয়াকে গ্রেপ্তারের পর দিন বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।
রিজভী বলেন, ‘আজকে দেশে কি পরিস্থিতি বিরাজমান! গত পরশু রাতে সোনিয়া নামের মহিলা দল নেত্রীকে রাজবাড়ী থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। তার দুটি বাচ্চা আর্তনাদ করেছে। তিনি নাকি ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।
‘তো প্রধানমন্ত্রী কি বলবেন যে, তার কত পার্সেন্ট সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে? শতকরা ৩০ ভাগ, ৪০ ভাগ সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে?’
জেলা মহিলা দলের একজন কর্মী ও ‘রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্স ক্লাব’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা।
রাজবাড়ীর মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সামসুল আরেফিন চৌধুরী থানায় জমা দেয়া এক অভিযোগে বলেন, সোনিয়া প্রধানমন্ত্রীর সুনাম নষ্টে মিথ্যা ও মানহানিকর বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার করেন।
পৌর এলাকার বেড়াডাঙ্গার বাসা থেকে মঙ্গলবার গভীর রাতে সোনিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুধবার আদালতে তোলা হলে জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, ‘কই ইডেনের ঘটনায় আপনার সুনাম ক্ষুণ্ন হয় না। কারণ, তারা তো ছাত্রলীগ, আপনার দর্শের সন্তান তারা। তাদের অপকর্মে আপনার সুনাম নষ্ট হয় না?
‘ছাত্রলীগের সভাপতি, সেক্রেটারি যখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সঙ্গে মোবাইলে ভবন নির্মাণের চাঁদাদাবি করে তখন কি আপনার সুনাম ক্ষুণ্ন হয় না? পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখন বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে কথা বলব যে ক্ষমতায় রাখা যায় কি না, তখন কি আপনার সুনাম ক্ষুণ্ন হয় না?
‘আপনি দুই সন্তানের মাকে রাতের আঁধারে গ্রেপ্তার করেছেন। এটাতে আপনার সুনাম ক্ষুণ্ন হয় না? ফেসবুকে একটা পোস্ট কারণেই আপনার সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে?’
বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলার অভিযোগ এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে গণতন্ত্র ফোরাম।
রিজভী কথা বলেন বিদ্যুৎ বিপর্যয় নিয়েও। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জাননেত যে বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি হবে। সে জন্যই তিনি কুইক রেন্টালের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য চুরির সুযোগ দিতে ইনডেমনিটি আইন করেছেন।
‘আজকে গোটা দেশ চোরে গিজ গিজ করছে। নারী ফুটবলার কৃষ্ণা ও শামসুন্নাহারের ব্যাগ থেকে ডলার চুরি হলো। বাংলা একাডেমি থেকে বিদেশি রাষ্ট্রদূতের স্ত্রীর ভ্যানিটি ব্যাগ চুরি হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে একজন ছাত্রলীগের নেতা ছাগল চুরি করে পিকনিক করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়েছে। আজকে চোরের কবলে দেশ।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি খলিলুর রহমান ইব্রাহিমের সভাপতিত্ব ও আব্দুল্লাহ আল নাইমের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।
সনি বাংলা ডট কম/ইআবি