স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটির একাংশের বিরুদ্ধে পদ বাণিজ্য, ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন এবং ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়নের অভিযোগ তুলেছেন বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু। রোববার (১১ মে) রাজশাহীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লব ও গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের ত্যাগকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির কিছু নেতা তাদের নিজস্ব স্বার্থে আওয়ামীপন্থী সুবিধাভোগীদের পুনর্বাসন করছেন। এতে দলের আদর্শ ও লক্ষ্য আজ প্রশ্নের মুখে।”
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, রাজশাহী মহানগরের আওতাধীন রাজপাড়া থানা বিএনপির বর্তমান সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ একাধিক নেতা অতীতে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনসমূহের হয়ে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “এরা কেউই বিগত আন্দোলনে রাজপথে ছিলেন না, বরং কেউ কেউ সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় দেশের বাইরে নির্বিঘ্নে থেকেছেন। অথচ সাধারণ ত্যাগী কর্মীরা ছিলেন জেলে, রাস্তায়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলনে।”
সাইদুর রহমান অভিযোগ করেন, মহানগর কমিটিতে এমন অনেকেই আছেন যাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলাও হয়নি, গ্রেফতারও হননি, ফলে আন্দোলনের কঠিন সময়গুলোতে তাদের ভূমিকাই প্রশ্নবিদ্ধ। অনেকেই তাদেরকে আওয়ামী লীগের পছন্দনীয় ‘এজেন্ট’ হিসেবে সন্দেহ করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে, মহানগর কমিটির কিছু নেতা বেআইনিভাবে সরকারি জমি ও প্রতিষ্ঠান দখল, চাঁদাবাজি ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে জড়িত বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মহানগর থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত কমিটিগুলোতে দীর্ঘদিনের নির্যাতিত-পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে করে রাজশাহী বিএনপির ঐতিহ্যবাহী সাংগঠনিক শক্তি ভেঙে পড়ছে। চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়ার কারণে দলে বিশৃঙ্খলা ও দ্বন্দ্ব বাড়ছে বলে জানান নেতারা।
সাইদুর রহমান পিন্টু বলেন, “এ ধরনের কার্যকলাপ দলীয় আদর্শ ও জনআন্দোলনের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। আমরা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানাই, এসব অপতৎপরতা বন্ধে দ্রুত হস্তক্ষেপ করুন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা রাজপথের নেতাকর্মীরা সংগঠনকে ভালোবাসি, দলকে রক্ষা করতে চাই। কিন্তু দলে যদি বিশ্বাসঘাতকতা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়, তবে তা গণমানুষের আন্দোলনের ভবিষ্যৎকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।”
জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। যারা সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তাদের বলব—নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে দল, দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করুন।”
আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা বলেন, “সাবেক যুবদল নেতা আবুল কালাম আজাদ সুইট ৫ আগস্টের ঘটনার পর এক সরকারি কর্মকর্তাকে অফিস থেকে টেনে বের করে দিয়েছিলেন। এ জন্য তাকে বহিষ্কার করেছিলাম। পরে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করলেও এখন তিনি যা খুশি তাই করছেন। এই সংবাদ সম্মেলন তারই ধারাবাহিকতা।