স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর উদ্যোগে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে একটি বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১ টায় ‘দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ ও রমজানের পবিত্রতা রক্ষা’ শীর্ষক এ কর্মসূচি শুরু হয় হেতেম খাঁ বড় মসজিদ (জাদুঘর মোড়) থেকে এবং মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে শেষ হয় সাহেব বাজার বড় মসজিদের সামনে এক সমাবেশের মাধ্যমে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা কেরামত আলী। সভাপতিত্ব করেন তিনি, এবং ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহবুবুল আহসান বুলবুল সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগরীর নায়েব আমীর এ্যাড. আবু মোহাম্মদ সেলিম, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসাইন ও আব্দুস সামাদ, কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক এমকেএম সরোয়ার জাহান প্রিন্স, জসিম উদ্দিন সরকার, তৌহিদুর রহমান সুইট, আশরাফুল আলম ইমন, সিরাজুল ইসলাম, কামরুজ্জামান সোহেল, ডাঃ হাসানুজ্জামান, হাফেজ নুরুজ্জামান, মাওলানা রুহুল আমিন, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজশাহী মহানগরীর সেক্রেটারি ইমরান নাজির সহ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন থানার আমীর ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং রমজানের পবিত্রতা রক্ষার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ড. মাওলানা কেরামত আলী তার বক্তৃতায় বলেন, “রমজান মাসে আমাদের মুসলিম সম্প্রদায় আল্লাহর ফরজ ইবাদত পালন করতে যাবে। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের কারণে সাধারণ মানুষ এখন দুই মুঠো খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে। রমজান সামনে রেখে বাজারে দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর কারণে মানুষের জন্য সেহরি ও ইফতার করাও কঠিন হয়ে পড়ছে। আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার যদি ভর্তুকি দেয়, তবে সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে রমজানের ইবাদত করতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, “খেজুরের দাম বেড়েছে এবং অতিরিক্ত শুল্কের কারণে দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দাবি, রমজানের জন্য খেজুরের শুল্ক পুরোপুরি মুক্ত করতে হবে।”
এ্যাড. আবু মোহাম্মদ সেলিম তার বক্তৃতায় বলেন, “বর্তমান সরকারের অব্যবস্থাপনা ও ব্যর্থতার কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। আমাদের দাবি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে।”
অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসাইন বলেন, “রমজান মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা বন্ধ করতে হবে। সরকারের উচিত রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।”
অধ্যাপক এমকেএম সরোয়ার জাহান প্রিন্স বলেন, “আমরা আমাদের স্বাধীনতা শহীদদের রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি। কিন্তু এখন সরকার গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা নষ্ট করছে। আমাদের দাবি, ফ্যাসিস্ট সরকার ও তার দোসরদের শাস্তি দিতে হবে, এবং দেশের রাষ্ট্রীয় ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে হবে।”
ড. হাসানুজ্জামান বলেন, “দেশে শান্তি, নিরাপত্তা এবং আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়ন করতে হবে। জনগণের জান ও মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের উচিত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।”
আজকের বিক্ষোভ মিছিলে জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন নেতা, কর্মী এবং সমর্থকরা অংশগ্রহণ করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাহেব বাজার মসজিদের সামনে এসে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তারা একসাথে দাবি জানান, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রমজানে পবিত্রতা রক্ষা এবং দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য।
এদিকে, সমাবেশ শেষে জামায়াতে ইসলামী নেতা-কর্মীরা তাদের দাবি পূরণের জন্য সরকারের কাছে অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।