ফরাসি ফুটবলে স্বর্ণযুগ শুরু হয়েছিল দিদিয়ের দেশমের হাতে। ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ২০ বছর পর কোচ হয়েও সাফল্য পেয়েছেন। ২০১৮’র রাশিয়া বিশ্বকাপ জেতেন দিদিয়ের দেশম। এমন সাফল্যের মণি-মুক্তায় উজ্জ্বল ক্যারিয়ার বিশ্বফুটবলে খুব বেশি নেই।
ফুটবলার ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জেতার নজির ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ছিল কেবল কিংবদন্তি মারিও জাগালোর। ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন ব্রাজিলকে। ১৯৭০’র বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দলের কোচও ছিলেন জাগালো।
জার্মানির ফ্রানজ বেকেনবাওয়ার অধিনায়ক হিসেবে ১৯৭৪ সালে, আর কোচ হিসেবে ১৯৯০ সালে বিশ্বকাপ এনে দেন জার্মানিকে। এই কৃতিত্ব একটা সময় ছিল কেবল বেকেনবাওয়ারের। সবশেষ রাশিয়ায় বিশ্বকাপে সেই রেকর্ডে ভাগ বসান ফ্রান্সকে ২০ বছর পর বিশ্বকাপ জেতানো দিদিয়ের দেশম।
১৯৯৮ সাল। নিজ দেশেই বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠে ফ্রান্স। ব্রাজিলের তখনকার ‘অল স্টার’ দলটা হারে জিদান ম্যাজিকে। দুর্দান্ত সেই দলটার অধিনায়ক ছিলেন এই দেশম।
সিরি আ, লিগ ওয়ানে দাপটের সঙ্গে ডাগ আউট সামলানোর সুবাদে ২০১২ সালে দেশমকে দেয়া হয় ফ্রান্স জাতীয় দলের দায়িত্ব। কিন্তু ২০১৪ বিশ্বকাপে ফরাসিদের শেষ আট পর্বেই থামতে হয়।
হাল ছাড়েননি দেশম। ২০১৬ সালে এই দলটাকে ইউরোর ফাইনালে তোলেন। তবে রোনালদো না খেললেও ফাইনালে পর্তুগালের কাছে হেরে যায় ফ্রান্স। বীর পরিণত হন শ্ত্রুতে। এরপর দেশমকে বিদায় করার দাবি ওঠে। ভাগ্যিস সেই দাবি কানে তোলেনি ফরাসি ফুটবল কর্তৃপক্ষ।
গোড়ামির জন্য দুর্নাম থাকলেও সাফল্য কিন্তু দেশমের কাছে অধরা থাকেনি। কারণ হয়তো নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল থাকার আশ্চর্য ক্ষমতা। দেশমের দল মস্কোর ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছিল। দু’বছর আগের ইউরো ফাইনালের পুনরাবৃত্তি হয়নি সে রাতে। হওয়ার কথাও ছিল না। কারণ দেশম ভুল থেকে শিক্ষা নিতে জানেন। নিজের ফুটবল দর্শনের প্রতি অবিচল থাকতে জানেন। আর সেই বৈশিষ্ঠ নিয়েই তার অধীনেই কাতার বিশ্বকাপ খেলতে নামবে ফ্রান্স।